মফস্বলের সুপারহিরো: বাবলু ভাইয়ের দুষ্টু কাণ্ডকারখানা!

 মফস্বলের সুপারহিরো: বাবলু ভাইয়ের দুষ্টু কাণ্ডকারখানা!






মফস্বলের ছোট্ট গ্রামটিতে এমন একজন আছেন যিনি নিজেকে গ্রামের “সুপারহিরো” বলে দাবী করেন। তিনি আর কেউ নন—বাবলু ভাই! তার বয়স প্রায় চল্লিশ, কিন্তু চালচলনে আর ভাবভঙ্গিতে এখনো তরুণদের হার মানিয়ে দেন। তার বিশেষত্ব হলো নিজ হাতে বানানো অদ্ভুত যন্ত্রপাতি, যেগুলো নিয়ে তিনি গ্রামে নিত্যনতুন কাণ্ড ঘটিয়ে বেড়ান।

গল্পের শুরু এক সন্ধ্যাবেলায়, যখন বাবলু ভাই বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলেন—তিনি মফস্বলের বাজারে গিয়ে একটি “গোপন মিশন” পরিচালনা করবেন। মিশনের উদ্দেশ্য ছিলো গ্রামবাসীকে দুষ্ট লোকের হাত থেকে রক্ষা করা, যদিও গ্রামের মানুষ জানতো না তাদের মধ্যে কোনো দুষ্ট লোক আছে কি না।


প্রথম অধ্যায়: বাবলু ভাইয়ের প্রস্তুতি

রাত পোহানোর আগেই বাবলু ভাই একগাদা অদ্ভুত যন্ত্রপাতি বানানো শুরু করলেন। এগুলো দেখতে যে যেমন, কাজেও ঠিক তেমনই অদ্ভুত। কারো কাছে চকলেটের মতো মনে হতে পারে, কিন্তু এই চকলেট বাবলু ভাইয়ের মতে “অলৌকিক স্পাই ক্যামেরা।” কিছু তারের সাহায্যে বানালেন এক ধরনের “হাতিয়ার,” যা নাকি দুষ্ট লোকের বিপক্ষে তার শক্তি বাড়াবে!

যখন তিনি বাজারে উপস্থিত হলেন, সবাই হাসিতে ফেটে পড়লো। কেউ বললো, “বাবলু ভাই, সুপারহিরো হতে গিয়েই না একদিন বিপদে পড়ে যাবেন!” তবে বাবলু ভাই ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। তিনি বললেন, “তোমরা কিছুই বোঝো না! আমি এই গ্রামটাকে একদম বদলে ফেলবো, দেখোই না!”


দ্বিতীয় অধ্যায়: বিপদের ঘ্রাণ

কিছুদিন পরে বাজারে গুঞ্জন উঠলো যে গ্রামের কিছু ছোট ছোট দোকান থেকে জিনিসপত্র অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। সবাই ভেবেছিলো এটা হয়তো ইঁদুরের কাজ, কিন্তু বাবলু ভাই দৃঢ়ভাবে বললেন, “এটা নিশ্চয়ই কোনো দুষ্ট লোকের কাজ! কেউ আমার এই গ্রামে ঢুকে পড়েছে!”

তৎক্ষণাৎ বাবলু ভাই তার যন্ত্রপাতি নিয়ে বাজারে হাজির হলেন। তার এক হাতে ছিলো “আলোর গোলক,” আরেক হাতে “রহস্যের চকলেট।” তিনি আলোর গোলকটি বাজারের ঠিক মাঝখানে স্থাপন করলেন এবং ঘোষণা দিলেন, “যেই চুরি করতে আসবে, তার সব গোপন তথ্য আমি জানবো!”


তৃতীয় অধ্যায়: সুপারহিরোর আসল পরিচয় প্রকাশ

রাত গভীর হলে, বাবলু ভাই তার মিশন পরিচালনা করতে বাজার পাহারা দিতে শুরু করলেন। একসময় সত্যিকারের চোরকে ধরে ফেললেন, যিনি আর কেউ নন, বাবলু ভাইয়ের শৈশবের বন্ধু—পিন্টু! পিন্টু বহুদিন শহরে ছিল এবং এখন গ্রামে ফিরে ছোটখাটো চুরি করতে শুরু করেছিল। বাবলু ভাই তাকে চিনতে পেরে বললেন, “তুই আবার! বন্ধুর মধ্যে এভাবে প্রতিযোগিতা করা ঠিক না!” পিন্টু হেসে বললো, “ও বাবলু, তুই এখনো সেই পুরোনো কাণ্ডকারখানা চালিয়ে যাচ্ছিস!”

শেষমেশ, বাবলু ভাই গ্রামবাসীর মধ্যেই তার সুনাম রেখে দিলেন। তিনি বললেন, “এখনো মিশন শেষ হয়নি। আমাকে আরও কিছু যন্ত্রপাতি বানাতে হবে!”



গল্পের মূল বার্তা:

সত্যিকারের সুপারহিরোদের ক্ষমতা কোনো জাদুবিদ্যা কিংবা বড় বড় হাতিয়ার নয়। তাদের প্রকৃত শক্তি হলো ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, এবং মানুষের উপকারে আসার ইচ্ছা।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url